মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের লাভলোকসান

0
73

দিদি এলেন তবে ঝড়ের গতিতে। এলেন কিন্তু হেঁটে দেখলেন না। আকাশ পথে এলেন। তাঁর কর্মচারীরা প্রস্তুত ছিলেন। শহরের ব্যস্ততম অঞ্চলকে ঘিরে দিয়ে তারা তাদের বস্ কে বোঝালেন আপনি ভয় পাবেন না। একটি মাছিও গলে ঢুকতে পারবে না আপনার কনভয়ের সামনে। নিঃশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়ে অকুতভয় মুখ্যমন্ত্রী এলেন। আচ্ছা উনি কি জন্য এসেছিলেন। খাতায় কলমে প্রসাশনিক বৈঠকে এসেছিলেন। কিছু শিলান্যাস করবেন, একবার উদ্বোধন হয়ে যাওয়া প্রকল্পের আবার উদ্বোধন করবেন। একই কথা বারবার বলবেন। অনেকেই বলছেন পরিবর্তন একটা হয়েছে বটে সেটা হলো অকাজের কথায় বাম এবং কংগ্রেসের জায়গায় দিদি এবার বিজেপি কে ঠাঁই দিয়েছেন। এলেন মুর্শিদাবাদ জেলা সফরে। কাঁদুনি গাইলেন কেন্দ্রের বঞ্চনার। হাজারো সমস্যার জেলা মুর্শিদাবাদের মানুষের জন্য কিচ্ছু বললেন না। সাইকেল দিলেন এর আগেও দিয়েছেন। এখন তো কিষাণ মান্ডি গুলো সাইকেল দেওয়ার কাজেই ব্যাবহৃত হয় । তাহলে নতুন করে দেওয়ার দরকার কি ছিলো। মানুষ বোঝে নি। ফি বছর বানভাসি মানুষের জন্য কি ব্যবস্হা নিলেন? নারী এই জেলায় গরুর মতো পাচার হয়। লোকে বলে সঞ্জয় সিং যখন এ জেলার এস পি ছিলেন তখনই না কি সর্বোচ্চ গরু পাচার হয়েছিল। এগুলো তৃণমূল থেকে বটবৃক্ষ সকলের ই জানা। সেই গুণধর এস পি এই দিন দিদির পাশেই ছিলেন। নতুন ভাবে রেশন দোকানদার দের চমকালেন প্রশাসনিক সভায়। মনে হলো বলতে চাইলেন সমঝে চলো। এখন এ রাজ্যে্ কোথাও কোন হাত নেই। কাস্তেও নেই। কাজ ও নেই। আছে ফুলের বাগান। নতুন ফুল পদ্মের আমদানিতে তার দলের লোকেই বলে দিদির দয়ায় পদ্ম বিকোচ্ছে এ রাজ্যে। আর বলবে নাই বা কেন? যে জেলার চৌহদ্দিতে বিজেপি তার ছায়াও দেখাতে পারে নি সেখানে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার সভায় কিনা বিজেপিকেই দিদি গালাগাল দিলেন? হে রাম! বললেন  একবার ও ওদের বিভেদের রাজনীতি র সমালোচনা করলেন না? দিদি এই যে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো আপনার সামনে ঠাঁই বসে থাকলো তারা পি এন বি নিয়ে কি বলবে বলুন তো। তাদের তো সারদায় টাকা রাখার অভিজ্ঞতা এখনো বাসি হয়ে যায় নি। এই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষ জনের বেশিরভাগ পুরুষ বাইরে চলে যায় দিনমজুর খাটতে। মেয়েরা এর বাড়ি ওর বাড়ি কাজ করে খায় । পেটের দায়ে মেয়ে বিক্রি করে দেয়। দিদি এখনো ওখানে বাল্যবিবাহ হয়। পণপ্রথা ওখানে বন্ধ তো হয়ই নি। বাড় বাড়ন্ত চলছে। আপনি রুপশ্রী চালু করেছেন। ওরা রুপশ্রীর টাকাটা চায়। কেউ কেউ কন্যাশ্রীর টাকা বয়স ভাঙিয়ে ঘরে নিয়ে আসে মেয়েকে কাজে লাগিয়ে। ওদের যে বেঁচে থাকতে হবে । এছাড়া চলবে কি করে দিদি? কাজ নেই যে। সে খোঁজ রাখেন আপনার আমলারা। না রাখেন না। তাই আপনিও জানেন না। তাই তো আপনি বলেন সব সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। 81 লক্ষ লোক চাকরি করছে। দিদি রাজ্যের জনসংখ্যা কত? জঙ্গিপুরে বিড়ি শ্রমিকদের হাল খারাপ কেন তা জেনেও আপনি জাকির হোসেন কে প্রশ্ন করলেন না কেন দিদি? উনি তো আবার শ্রম দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী। তাও জানতে চাইলেন না কেন? না কি কারণটা জানেন?
আচ্ছা আপনার দাবী টা কি?আসলে আপনি চাইছেন আপনার দলের যেমন এক মাত্র নায়ক আপনি, তেমনি গোটা রাজ্যেের মানুষ তাদের দুঃখ কষ্ট বুকে লুকিয়ে আপনাকেই সেলাম ঠুকুক। তাই তো করছে তাঁরা। কোথাও কেউ আপনার বিরোধিতা করছে না। করলেই তো জেল জরিমানা বরাদ্দ। নইলে কি একটা আস্ত কাজের দিন এইভাবে স্তব্ধ করে দিতে পারতো আপনার প্রশাসন? জনগনের টাকা কি শুধু কেন্দ্রই নয়ছয় করছে? আপনিও কি করছেন না? সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই উদ্দেশেই আপনার এই জেলা সফর। অথচ আপনি সুচতুর বুদ্ধিতে এড়িয়ে গেলেন ভোটবাক্সের কথা। যেন আপনি জেনেই ফেলেছেন সব পঞ্চায়েত আপনার,সমিতি আপনার , জেলা পরিষদ আপনার। সত্যিয়ই কি তাই? না কি সব না পাওয়ার সন্দেহেই আপনার এত অস্থিরতা? আপনি ঠিকই বলেছেন “গণতন্ত্র টাকার কাছে বিক্রি হয় না। মানুষ টাকার কাছে বিক্রি হয় না।“

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here