‘কালচার ও কোভিড’ শীর্ষক আলোচনায় অনিরুদ্ধ, অনিন্দ্যরা

নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত চার মাস ধরে বন্ধ সব সিনেমা হল। টেলিসিরিয়ালগুলোর শুটিং সদ্য শুরু হলেও ভীষণভাবে অনিশ্চয়তা চলছে সিনেমার শুটিং নিয়ে। প্রযোজকরা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না যদি ছবি তৈরি করা হয় তাহলে কি সেটা নব্য প্রযুক্তির ওটিটি প্লাটফর্মে দেখানো হবে নাকি মাল্টিপ্লেক্সে? ছবি মুক্তি নিয়ে এত দোলাচলের মধ্যেই আশার আলো দেখছেন বিনোদনজগতের দিকপালরা।

এক বেসরকারি সংস্থা আয়োজিত পূর্ব ভারতের প্রথম টানা তিন-দিনের ভার্চুয়াল এডুকেশন সামিটের দ্বিতীয় দিনে ‘কালচার ও কোভিড’ শীর্ষক আলোচনায় এই বিষয়গুলিই উঠে এল স্বর্ণকমল বিজয়ী পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী, জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ও বর্ষীয়ান অভিনেতা বরুন চন্দর কথায়। সেশনটির সঞ্চালনায় ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা বিপ্লব দাশগুপ্ত।

‘অন্তহীন’, ‘অনুরণন’ কিংবা ‘পিঙ্ক’-এর মতো বক্স অফিসে সাড়া জাগানো ছবির পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী জানান, ‘আমাদের এই নিউ নর্মাল পরিস্থিতি নিয়েই চলতে হবে। আজ আমরা অনেক বেশি সময় পাচ্ছি নিজেদেরকে নিয়ে ভাবার, অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি। আর ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা অনেক কিছু করতে পারছি যেটা আগে ভাবতেও পারতাম না। এমনকি সিনেমা রিলিজও ওটিটি – প্লাটফর্মে হচ্ছে।‘

‘চন্দ্রবিন্দু’ খ্যাত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের মতে- ‘করোনার ভীষণ প্রভাব পড়েছে সঙ্গীতজগতে। আমরা লাইভ স্টেজে প্রোগ্রাম করলে দর্শকের মুড্ অনুযায়ী গান গাই। সেটা ডিজিটালি সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা এর মধ্যেই ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠান করতে চলেছি কলকাতায় বসে আগামী ১৫ অগাস্ট। এটাও আজ সম্ভব হচ্ছে এই নব্য প্রযুক্তির জন্যই।‘

আরও পড়ুনঃ ফের মা হতে চলেছেন বেবো, তৈমুর এবার সিনিয়র!

অভিনেতা বরুন চন্দ মনে করেন, থিয়েটার কিংবা যাত্রার মতো স্টেজ অনুষ্ঠানে করোনার প্রভাব থাকছেই। কিন্তু থিয়েটারকেও হয়তো ডিজিটাল করে দেওয়া সম্ভব হবে অদূর ভবিষ্যতে। ১১ অগাস্ট থেকে শুরু হওয়া ভার্চুয়াল সামিটের সব কটি সেশনই বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে আয়োজন করা হয়েছে। যার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং জৈব প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

আরও পড়ুনঃ ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় মিউজিক অ্যাকাডেমির উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার গান’

ভার্চুয়াল সামিটের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটিতে ছিল ‘কোভিড ও সাইবার সিকিউরিটি’ নিয়ে আলোচনা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ভীষণভাবে ব্যাহত হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি। প্রতিনিয়তই খবর আসে অনলাইন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির। এদিনের সাইবার সিকিউরিটির সেশনে উপস্থিত ছিলেন এথিক্যাল হ্যাকার হিসেবে খ্যাত সন্দীপ সেনগুপ্ত, প্রখ্যাত আইনজীবী তমালকান্তি মুখার্জি ও ন্যাসকমের পূর্ব ভারতের প্রধান নিরুপম চৌধুরী।

শুধুমাত্র লকডাউনের এই সময়কালে সাইবার ক্রাইম বেড়ে গিয়েছে ২০০% এরও বেশি। কীভাবে নিজেকে রক্ষা করা যাবে এই বেড়ে চলা সাইবার ক্রাইম থেকে তার বেশ কিছু সাজেশন শ্রোতাদের এদিন দিলেন সন্দীপ সেনগুপ্ত। ন্যাসকমের তরফেও যে এ বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত আলোচনা চলছে তার ব্যাখ্যা দিলেন নিরুপম চৌধুরী। তমালবাবু জানান, সাইবার ক্রাইমের আইনি বিষয়।

ভার্চুয়াল সামিটের শেষ দিনের প্রথম সেশনটি ক্রীড়াবিষয়ক। থাকবেন বর্ষীয়ান হকি খেলোয়াড় গুরবক্স সিং, এটিকে মোহনবাগানের সহকারী কোচ সঞ্জয় সেন ও প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার দীপ দাশগুপ্ত। আর সামিটের শেষ সেশনটির আলোচনার বিষয় স্বাস্থ্য, নি:সন্দেহে যা কিনা আজকের দিনে সব আলোচনারই কেন্দ্রবিন্দু। তিনজন প্রথিতযশা ডাক্তার থাকবেন এই শেষ সেশনটিতে। থাকবেন প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ কুণাল সরকার, প্রখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ গৌতম মুখোপাধ্যায় ও প্রখ্যাত জেনারেল ফিজিশিয়ান ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস।