পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
উপচে পড়ছে হল।কালোবাজারি হচ্ছে টিকিটের। আর সিনেমার পর্দায় মিঠুন চক্রবর্তী বলছেন,”কোনও থানা নয়,কোনও কোর্ট নয়, ফয়সালা অন দ্য স্পট।” সিনেমার নাম ‘মিনিস্টার ফাটাকেষ্ট।’বীরভূমের এই কেষ্ট মিঠুন চক্রবর্তীর ভক্ত কিনা জানা নেই।
তবে ইনিও স্পটেই ফয়সালা করতে পছন্দ করেন।বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।শনিবার সিউড়ি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ডেকেছিলেন। আর সেখানেই সাংগঠনিক কাজে সন্তুষ্ট না হয়ে মঞ্চে বসেই দলের নেতাদের নির্দেশ দিলেন, “অ্যাই, অঞ্চল সভাপতিকে সরিয়ে দাও। অঞ্চল প্রেসিডেন্ট সরাও।”
আরও পড়ুনঃ একশো দিনের কাজে দূর্নীতির অভিযোগ
প্রথমে অঞ্চল ধরে ধরে সভাপতির থেকে সাংগঠনিক কাজকর্মের খতিয়ান নেন কেষ্ট মণ্ডল।কখনও আবার অঞ্চল সভাপতিরা ঠিক বলছেন কিনা,তা যাচাই করতে প্রশ্ন করেন বুথ সভাপতিদের।সভা চলতে চলতেই নগুরি অঞ্চলের সভাপতি বিভাস দাসকে বলেন, “১২৪২ ভোটে হেরেছিলে।এ বার কী হবে?” উল্টোদিক থেকে উত্তর আসে, “জিতব স্যার!” কিন্তু জিতব বললেই তো আর হবে না! তিনি কেষ্ট মণ্ডল।
জেলার সংগঠন চেনেন হাতের তেলোর মতো।জানেন কোথায় কী রোগ আর কী ওষুধ দিতে হবে। বুথসভাপতিকে জিজ্ঞেস করেন,অঞ্চল সভাপতি মিটিং ডাকেন?কটা মিটিং হয়? বছরে পাচ-ছ’টা মিটিং হয়? বুথসভাপতিরা আমতা আমতা করতেই ব্যাপারটা বুঝে ফেলেন কেষ্টবাবু।আর চেয়ারে বসেই বলে দেন, ‘অঞ্চল প্রেসিডেন্ট সরাও।’
এদিন সভায় অনুব্রতকে এ-ও বলতে শোনা যায়, “এদের নিজেদের মধ্যেই খাড়াখাড়ি। এ মাটিতে এ ওকে মানে না, ও মাটিতে ও একে মানে না। কাজের চেয়ে দলাদলি বেশি। মানুষকে পরিষেবা দেয় না। মানুষের সঙ্গে মেশে না।”
কয়েক মাস আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়া জেলা সফরে গিয়েছিলেন। প্রশাসনিক সভা থেকে সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে দিদি জিজ্ঞেস করেছিলেন কিসান ক্রেডিট কার্ডের কাজ কেমন হচ্ছে। ঠিক মতো উত্তর না পেয়েই পূর্নচন্দ্রকে পুরো ছেঁটে ফেলেন দিদি।ঠিক একই ভঙ্গিমায় শনিবার ফয়সালা করলেন দিদির অন্যতম ভরসার নেতা অনুব্রত মণ্ডল।সামনে ভোট। ওই জেলায় লোকসভার দুটি আসন।
পূর্বের খবরঃ জামালপুরে মসজিদ ও কবরস্থান তৈরির কাজের উদ্বোধন
দিদি ঘোষণা করে দিয়েছেন, ‘বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ।’ আর এখন যদি অঞ্চল সভাপতিরা সংগঠনে নজর না দেন, জেলা সভাপতির তো চিন্তা হবেই! এমনিতে অনুব্রত মণ্ডল সংগঠনের ব্যাপারে কোনও কম্প্রোমাইজ করেন না। ক’মাস আগে নানুরের সভায় ফাঁকা মাঠে মিটিং করতে হয়েছিল তাঁকে।
তারপর আহমেদপুরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন নানুরের সভাপতিকে। ভরা মাঠ দেখিয়ে সভা মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, “শিখে যাও কীভাবে লোক করতে হয়!” তারপর নানুরে গিয়ে ফের সভা করেছিলেন অনুব্রত। এ দিন ফের একবার ঝাঁকুনি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন ফাঁকিবাজি আর কোন্দল করে দলে থাকা যাবে না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584