পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ সমাবর্তনের আগেই আগামী তিন বছরের জন্য বিশ্বভারতীর আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম প্রস্তাব করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠালো বিশ্বভারতী। সোমবার বিকালে বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই আবারও আচার্য হিসাবে বেছে নিল বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে মার্চ মাসে। বিশ্বভারতীর আইন [ধারা ১৩, ২বি] অনুসারে যতদিন নতুন আচার্য না নিয়োগ হচ্ছেন ততদিন তিনিই দায়িত্বভার বহন করে যাবেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নরেন্দ্র মোদীকে আগামী তিন বছরের জন্য আচার্য হিসাবে নাম প্রস্তাব করে আজ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাল। বিশ্বভারতীর আইন অনুসারে পদাধিকার বলে দেশের রাষ্ট্রপতি বিশ্বভারতীর পরিদর্শক এবং তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সুপারিশ মত তিন বছরের জন্য বিশ্বভারতীর আচার্য নিয়োগ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কোথাও প্রধানমন্ত্রীই আচার্য হবেন এমন উল্লেখ না থাকলেও দেখা গেছে শুধুমাত্র একবার ছাড়া প্রতিবারই দেশের প্রধানমন্ত্রীই আচার্য হয়েছেন। বিশ্বভারতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন জানান, “আবার আগামী তিন বছরের জন্য আমরা আমাদের আচার্য হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর নাম কর্ম সমিতি বেছে নিয়েছে”।
স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি ও কোর্ট উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটির সদস্য হিসাবে দুজনকে বেছে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে বিশ্বভারতীর উপাচার্য নিয়োগের জন্য যে সার্চ কমিটি তৈরি হবে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি থেকে একজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট থেকে সদস্য হিসাবে একজনের নাম প্রস্তাব করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক তথা দেশের রাষ্ট্রপতি অপর একজন কে নিয়োগ করবেন। তিনিই হবেন সার্চ কমিটির সভাপতি। সার্চ কমিটি উপাচার্য নিয়োগের জন্য কয়েকজনের নাম সুপারিশ করবেন, সেখান থেকে চূড়ান্ত নাম বেছে নেবেন পরিদর্শক তথা দেশের রাষ্ট্রপতি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি থেকে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটির সদস্য হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আদ্য প্রসাদ পাণ্ডে কে। অন্যদিকে কোর্ট থেকে সার্চ কমিটির সদস্য হিসাবে নাম ঠিক হয়েছে কৃষি বিজ্ঞানী এস আয়াপ্পানের। দুই বছরের বেশী সময় ধরে বিশ্বভারতীতে কোন স্থায়ী উপাচার্য নেই। বছর দুয়েক আগে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক সুশান্ত দত্তগুপ্তকে বরখাস্ত করেন তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী। অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক স্বপন কুমার দত্ত। তিনি জানুয়ারী মাসে অবসর নেবার পর কিছুদিন উপাচার্যহীন হয়ে পরে বিশ্বভারতী। পর মানব সম্পদ বিকাশ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে ‘নতুন উপাচার্য না আসা পর্যন্ত’ দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে ভার তুলে দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ও সিনিয়ার প্রফেসর অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন কে। এর মধ্যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছিল। সেই কমিটি তৎকালীন পরিদর্শক তথা সেই সময়ের দেশের রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখোপাধ্যায়কে একটি সম্ভাব্য উপাচার্যের নামের তালিকা দিয়েছিল। কিন্তু সেই সব নাম ‘পছন্দ’ না হবার ফলে আবার নতুন করে করে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ বিকাশ মন্ত্রক।
ফিচার ছবি সংগৃহীত
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584