নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ
নন্দীগ্রাম! বামফ্রন্টকে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার বড় সোপান ছিল এই নন্দীগ্রাম। আর এখন আবারও সেই নন্দীগ্রামই হয়ে উঠল রাজ্যের মূল বিষয়।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের হাজরাকাটায় তৃণমূলের জমি রক্ষা আন্দোলনের শহীদ মঞ্চ থেকে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে তাকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্যের অপর এক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে ফিরহাদ হাকিম বলেন “আমরা কেউ প্যারাসুটে নামিনি কিংবা লিফটেও উঠিনি। আমরা সকলেই সিঁড়ি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে উপরে উঠেছি।আর সেই সিঁড়ি তৈরী করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বাস্তব সত্যটা ভুললে চলবে না।”
প্রসঙ্গত বেশ কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের কোন প্রতীক ছাড়াই রাজ্যের একাধিক জেলা সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক জায়গায় শুভেন্দুর ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে গিয়েছিল। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সেই জল্পনা ঘনীভূত হতে শুরু করল।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে শহীদ স্মরণ সভা করেছে শুভেন্দু অধিকারী। এরপর তার পাল্টা সভা করল ফিরহাদ হাকিম সহ অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব। এই দিন এই সভা থেকে তিনি আরও বলেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আলোচনা করলে যেমন গান্ধীজীর নাম আনতেই হবে,তেমন করে নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর-ভাঙ্গড়ের আন্দোলনের কথা উঠলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবেই।
কারণ মমতা ব্যানার্জী ছাড়া এই রাজ্যে কৃষি জমি রক্ষার আন্দোলন ভাবাই যায়না। হাজরাকাটার শহীদ মঞ্চ থেকে এই কথায় বলেন রাজ্যের নগরউন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।ফিরহাদ হাকিমকে লোকে চিনতো না,যদি মমতা ব্যানার্জী সিঁড়িটা বেঁধে না দিত।যে দিন নন্দীগ্রাম ভুলে যাব,সিঙ্গুর ভুলে যাব,মমতা ব্যানার্জীর আন্দোলন ভুলে যাব, সেদিন মন্ত্রী হিসাবে থাকার অধিকার আমার নেই।
ফিরহাদ বলেন, মমতার নেতৃত্ব ছিলো বলেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা উঠে এসেছি। মাথায় রাখতে হবে গান্ধীজী ছাড়া ভারত হয়না,মাও সে তুঙ ছাড়া চায়না হয়না,লেলিন ছাড়া রাশিয়া হয়না আর মমতা ব্যানার্জী ছাড়া এই বাংলা হয়না। ইগো নিয়ে যদি ভুগি তাহলে নিজের মধ্যেই নিজে থেকে যাব। বিজেপি প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, “বিজেপিকে আনা মানে এই সোনার বাংলা কে উত্তর প্রদেশ বানিয়ে দেওয়া। যোগী আর দিলীপের মধ্যে কোন প্রার্থক্য নেই। সিপিএমের আমলে দলের নামে হত্যা লীলা হত আর বিজেপি এলে ধর্মের নামে হবে। কোন মানুষ একে সমর্থন করতে পারেনা।”
এর পরেই কারও নাম না নিয়ে বলেন, যারা বিজেপির পালে হাওয়া দেবেন ভাবছেন তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে।তিনি বলেন মির্জাফর ছিল,এখনও আছে। এরপরেই জোরালো কন্ঠে বলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলন মমতা ব্যানার্জীর,তৃণমূলের। সিঙ্গুরের আন্দোলন তৃণমূলের,মমতা ব্যানার্জীর অধিকার।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলতে দেওয়া যাবে না! ডোমকলে হুংকার সিদ্দিকুল্লাহ’র
এটা কেউ ছিনিয়ে নিয়ে নিতে পারবেনা। কারণ, মমতা ব্যানার্জীর নাম মানুষের হৃদয়ে লেখা আছে, মূলত তৃণমূল বনাম তৃণমূলের রাজনৈতিক সভা ও পাল্টা সভাতে রাজনৈতিক পারদ এখন ঊর্ধ্বমুখী এটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584