ভোট আসে ভোট যায় কথা রাখে না কেউই, হরিরামপুর ব্রিজ না হওয়ায় প্রতিবাদ সোশ্যাল মিডিয়ায়

0
147

জৈদুল সেখ, মুর্শিদাবাদঃ

মুর্শিদাবাদের রানিতলা থানার হরিরামপুর ব্রিজের দাবি দীর্ঘদিনের। ভোট আসে ভোট যায়, প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিন্তু কথা কেউ রাখেনি। হরিরামপুর ব্রিজ না হওয়ায় প্রতিদিন অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। সেই ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে হরিরামপুরের মানুষেরা যেন অন্ধকারেই রয়ে গেছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানকার বিশিষ্ট শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে সাধারন মানুষ।

Harirampur bridge | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

ভৈরব নদীর এক পাড়ে হরিরামপুর, অন্য পাড়ে গোপীনাথপুর ৷ হরিরামপুর , ছাতাই এলাকাটি ভগবানগোলা ২ ব্লক এবং রানিতলা থানার অন্তর্গত লালবাগ মহকুমার মধ্যে পড়ে এবং ভৈরবের ওপারে গোপীনাথপুর-রাণীনগর ১ ব্লক এবং ইসলামপুর থানার অন্তর্গত যা ডোমকল মহকুমার মধ্যে অবস্থিত।

হরিরামপুর ঘাট থেকে সবচেয়ে কাছের রেলওয়ে স্টেশন মুর্শিদাবাদ, যার দূরত্ব ১৮ কিমি ৷ বহরমপুর মোহোনা বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘাটের দূরত্ব ২৬ কিমি ভায়া আয়েশবাগ। এছাড়া ঘাট থেকে অটো, টোটো এবং মেশিন ভ্যান চলে লালবাগ বিডিও অফিস মোড় পর্যন্ত ৷

River | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

লালবাগ বা বহরমপুর এত কাছে হলে কি হবে! এলাকার মানুষের বক্তব্য রানিনগর-১ ব্লকের পাহাড়পুর, লোচনপুর, হূরসী, হেড়ামপুর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনকে বর্ষার তিনমাস ঘাট পেরোতে কি কষ্ট করতে হয় তা বলে বোঝানো সম্ভব না৷ জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগীকে নিয়ে কোনোভাবেই লালবাগ মহকুমা হাসপাতাল বা বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছানো সম্ভব নয়৷ বছরের বাকি ৮-৯ মাস ঘাট পেরোনো যায়, কিন্তু তাতেও অনেক সময় নষ্ট হয় এবং বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীর পক্ষে সেসময়েও ঘাট পেরোনো খুব কষ্টকর৷

লালবাগ এবং বহরমপুরের বিভিন্ন কলেজ যেতে পড়ুয়াদের ঘাট পেরোতে হয়৷ নদীর ওপারে লোচনপুর এন.কে হাইস্কুল , পমাইপুর হাই মাদ্রাসা, পাহাড়পুর ইউনিয়ন হাইস্কুল, আমিরাবাদ হাইমাদ্রাসা, রামনগর হাই মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিদিনই এই ঘাট পেরোতে হয় ৷ ট্রেন ধরার জন্য মুর্শিদাবাদ স্টেশন; ডাক্তার দেখাতে, বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে এবং অন্যান্য প্রয়োজনে জেলা সদর বহরমপুর যেতে হয় এলাকার লোকজনকে৷

আরও পড়ুনঃ করোনা রুখতে কান্দিতে রেড ভলান্টিয়ার্সের উদ্যোগে জীবানুমুক্তকরন

তাছাড়া, রানিতলা, তেতুঁলিয়া, ভগবানগোলা, জিয়াগঞ্জ থেকে নদীর ওপারে ইসলামপুর, রানিনগর ও ডোমকলের বিভিন্ন জায়গা যেতে এই ঘাট পেরোতে হয়৷ দোকানের সামগ্রী আনতে, আড়তে ফসল বিক্রি করতে যাওয়ার জন্য আরও কত প্রয়োজনে প্রায় হাজার দশেক লোককে ঘাট পেরোতে হচ্ছে প্রতিদিন৷ যা এই অত্যাধুনিক যুগে দাড়িয়ে এতো কষ্ট বলার অবকাশ রাখে না বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ঠ শিক্ষক সফিকুল ইসলাম।

আরও পড়ুনঃ সৌমিক হোসেনের অনুপ্রেরণায় বেঙ্গল প্রাইড ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

নদীর ওপারে গোপীনাথপুর থেকে ইসলামপুর ১৫ কিমি দূরে -ভরসা লছিমন , ম্যাজিক গাড়ি, অটো৷ বহরমপুর থেকে হরিরামপুর ২৬ কিমি, কিন্তু ইসলামপুর হয়ে ঘাটের ওপারে গোপীনাথপুরের দূরত্ব ৩৯ কিমি (দেড়গুন রাস্তা)৷ এই এলাকার লোকজন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে বঞ্চিত৷ গ্যাস সিলিন্ডার আনা, গাড়িতে পেট্রোল ভরা, ওষুধ কেনা সবকিছুতেই এলাকার লোকজনকে ইসলামপুর যেতে হয়৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় বালি , সিমেন্ট, পাথর, আসবাবপত্র সহ সবকিছুতেই পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায়৷

স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতা বিক্রেতা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে বাধ্য হয়ে পড়াশোনা ছাড়তে হয়৷ এক কথায়, একটা ব্রিজের অভাব এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে প্রতিমুহূর্তে গলা টিপে মারছে৷ ব্রিজ হলে প্রত্যক্ষভাবে নদীর দুই পাড়ের দুই থেকে তিন লক্ষ মানুষের জীবনের ব্যাপক উন্নতি হবে৷ আর পরোক্ষভাবে সংখ্যাটা পৌঁছবে প্রায় দশ লাখে৷

তাই এলাকা মানুষের একটাই দাবি, এই দুই এলাকাকে জুড়তে হরিরামপুর ঘাট বা পার্শ্ববর্তী কোনো এলাকায় ভৈরব নদীর উপর ব্রিজ তৈরী হোক৷ এখন দেখার বিষয় এই হরিরামপুর ব্রিজের জন্য এলাকাবাসীকে আর কত কষ্ট করতে হবে নাকি এবার তাদের হাসি ফোটাবে সরকারে। কী পদক্ষেপ নেয় সেদিনের অপেক্ষায়!

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here