সিমা পুরকাইত,দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ
বারুইপুরের পুরন্দরপুর শ্মশানে নতুন বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন হলো।বারুইপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হলো। বারুইপুর পুরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা সহ বারুইপুর ব্লকের ১৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধা দূর করতে বুধবার নতুনভাবে পুরন্দরপুর মঠের মহাশ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন হয়। চুল্লির উদ্বোধন করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান শক্তিরায় চৌধুরী,অতিরিক্ত জেলা শাসক শ্যামল মণ্ডল ,মহকুমাশাসক দেবারতি সরকার প্রমুখ।বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের পুরন্দরপুর মঠের এই শ্মশান বেশ পুরানো।আদি গঙ্গার ধারে এই শ্মাশানে বহুদিন ধরেই শবদাহ হয়ে থাকে।তাই এই মহাশ্মশানকে আধুনিক করার পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্যে সরকার। তারই ফলে এদিন এখানেও বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হল।
এদিন চুল্লি উদ্বোধন করে অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জী বলেন, ‘আদি গঙ্গার ধারকে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে সাজানো হবে।এই কাজে বাধা দিতে আদি গঙ্গার ধারে কোন খুঁটি পুতে দোকান হলে তার জন্য জনগনকে সচেতন হতে হবে।’ তিনি জানান এখানে একটি স্কুল ও কলেজ রয়েছে।শবদাহ করতে আসা মানুষ সংকীর্তন করেন।ফলে তাদের পড়াশোনার অসুবিধা হয়।তাই এই শ্মশানে আসার রাস্তা সরাসরি বাইপাশের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।তাতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার কোন ক্ষতি হবে না। পুরন্দরপুর মঠ মহাশ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে তৈরি করতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ হয়েছিল বলে জানা গেছে।
বারুইপুরে কীর্তনখোলাতে নতুন বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ ও জেলাশাসক। বারুইপুর পুরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সহ বারুইপুর ব্লকের ১৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জয়নগর ,ক্যানিং,মগরাহাট এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধা দূর করতে নবরূপে বারুইপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কীর্তনখোলা মহাশ্মশানের দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করা হলো।উদ্বোধন করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ,দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুর চেয়ারম্যান শক্তিরায় চৌধুরী,অতিরিক্ত জেলা শাসক শ্যামল মণ্ডল,মহকুমাশাসক দেবারতি সরকার প্রমুখ।কথিত আছে,১৫১০ সালে নিলাচলে অর্থাৎ পুরী যাত্রা কালে শ্রী চৈতন্য দেব সপার্সদ দারির জঙ্গল নামক আদি গঙ্গার তীর ধরে কীর্তন করতে করতে বারুইপুরের পুরাতন বাজার সংলগ্ন আটিসারা গ্রামে সাধু অনন্ত আচার্যের বাড়িতে আসেন।আদিগঙ্গার ধারে তিনি কীর্তন করছিলেন,সেই কীর্তন করার সময় কীর্তন দলের খোলটি ভেঙে যায় তাই সেই থেকে চৈতন্য স্মৃতি বিজরিত জায়গার নাম কীর্তন খোলা।২০১০ সালে কীর্তন খোলা মহাশ্মশানে প্রথম বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হয়।এদিন শ্মশানের দ্বিতীয় চুল্লির উদ্বোধন করে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , ‘কোন কাজ ফেলে রাখা যাবে না।দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে।বাম আমলে আদি গঙ্গার উপরে বাড়ি,সিনেমা হল তৈরি হয়েছিল।এখনও আদি গঙ্গার ধারে সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে।রাজ্যের কে এম ডি দপ্তর থেকে কীর্তন খোলা মহাশ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লিতে ৭২ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছিল।পশ্চিমবঙ্গ নতুনভাবে সেজে উঠছে।মুখ্যমন্ত্রী এত দ্রুত গতিতে উন্নয়নের কাজ করছেন,তা সামাল দিতে সাবাইকে হাপিয়ে উঠতে হচ্ছে।প্রশাসনের আধিকারিকরা যেমন হিমসিম খাচ্ছেন, জনপ্রতিনিধিদেরও কাজ করতে হচ্ছে।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে দক্ষিণ ২৪ জেলার রাস্তা ও নানান প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রশাসনের তরফে বারুইপুরেও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জী ছাড়াও ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নকর রাও,বারুইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শক্তি রায়চৌধুরি,ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাস প্রমুখ।এদিন অধ্যক্ষ আরোও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সারা রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের কাজ করছেন। সব জেলাতেই উন্নয়ন হচ্ছে। তাঁর উন্নয়নের কাজ অনেকে সহ্য করতে পারছেন না। একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া শক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশ নিয়ে কাজ করে। এই জেলাতেই অনেক রাস্তার কাজ শুরু হয়ে গেছে। আবার অনেক রাস্তার কাজ শুরু হওয়ার মুখে।
আরও পড়ুনঃ হাওড়া থেকে রিমোট মারফত নয়াগ্রা
সুন্দরবনকে পর্যটনের জায়গা বানাতে তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। দীঘাকে তিনি আকর্ষনীয় করে তুলেছেন। শুধু পর্যটন নয়, রাস্তা,পানীয় জল, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গরিব মানুষের জন্য চাল দেওয়া প্রভৃতি ক্ষেত্রেও তাঁর সমান নজর রয়েছে।’অনুষ্ঠানে জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জেলার বিভিন্ন রাস্তা ও পরিষেবার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584