শ্যামল রায় ,কালনাঃ
কালনা দুই নম্বর ব্লকের মীর হাট গ্রামের দূর্গা পুজো ঘিরে রয়েছে একাধিক কাহিনী।
এই দুর্গাপূজা হয় বৈষ্ণব মতে। ষষ্ঠীর দিন বাড়ির বউরা পান সুপারি দিয়ে গ্রামবাসীদের বরণ করেন। রীতি অনুযায়ী সপ্তমীর সকালে কুল দেবতা শ্রীধর ও ধান দিয়ে তৈরি দেবী লক্ষ্মী কে আনা হয় মন্ডপে। দশমীর রাতে পরিবারের সদস্যদের মতো গ্রামবাসীরাও শুদ্ধাচারে কলাপাতায় দেবীর নাম লিখে তা জলে ভাসিয়ে দেওয়ার রীতি আজও বিদ্যমান।
পুজোর কাহিনী সম্পর্কে জানা গিয়েছে যে প্রায় দুইশত বছর আগে এই মিরহাট গ্রামে দে পরিবারের লোকজন ছিল জমিদার। কথিত যে বাড়ির দরজায় বাড়ির কাজের লোক একটি ছোট মেয়েকে দেখতে পায়। সাজগোজ করে আসা মেয়ের আবদার ছিল তোমাদের বাবুর সঙ্গে আমি দেখা করতে চাই। কাজের লোক খবর দিল অন্দর মহলে। কর্তা বেরিয়ে এসে দেখেন কেউ কোথাও নেই। শুধু দরজার কাছে পড়ে রয়েছে একটি কাঁঠাল পাতা। ওই কাঁঠাল পাতায় শ্বেতচন্দনে লেখা রয়েছে আমার পুজো কর। পরিবারের মঙ্গল হবে। জনশ্রুতি এই ভাবেই দেবীর আদেশ পেয়েছিলেন জমিদার পরিবারের কর্তা সর্বেশ্বর দে ।সাবেক জমিদার বাড়ির আদলে তৈরি দে পরিবারের পুজো বাড়ি।
মন্দিরের গায়ে অজস্র কারুকার্য রয়েছে। দে বাড়িতে রয়েছে কাছারি বাড়ি ভোগ রান্নার ঘর পুজো পরিচালনার জন্য আলাদা ঘর।
পরিবারের সদস্যরা জানান ৬ পুরুষ ধরে তাদের এই পুজো চলছে। প্রথমে পদবি দে থাকলেও বর্তমানে চৌধুরী উপাধি।
আরো জানা গিয়েছে যে আগে একচালার এই প্রতিমা পুজো হত তালপাতার ছাউনিতে।
এখন মন্দির এর মধ্যেই পুজো হয়ে থাকে।
পরিবারের সদস্য রাম কৃষ্ণ হরি দে চৌধুরী জানিয়েছেন যে পুজোর খরচা বাবদ আমাদের ভাবতে হয় না। প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।
তবে এই পুজোয় একাধিক ঢাক থাকে। ঢাকের আওয়াজ শোনার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন গ্রামের মানুষ।
জানালেন গ্রামবাসী কালিপদ বৈরাগ্য। এই পুজো চৌধুরী বাড়ির পুজো হলেও গ্রামের সার্বজনীন পূজো হিসেবেই আখ্যা পেয়েছে। আগে পুজো ঘিরে যাত্রা থিয়েটার পালা গানের আসর বসতো এখন শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া কিছু হয় না।
তবে দূর-দূরান্ত থেকে ও পুজো দেখতে মানুষের ঢল নামে।
আরও পড়ুনঃ নিজস্ব আঙ্গিকে নওদায় রায়বেঁশে নৃত্যের প্রদর্শন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584