প্রীতম সরকার, উত্তর দিনাজপুরঃ
করোনা ঘিরে গোটা পৃথিবী তোলপাড়। গোটা দেশে যে ভাইরাসের জন্য কার্ফু চলেছে । একই সাথে কয়েকটি জায়গায় চলছে লক ডাউনও।এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব না করে, তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ভিন রাজ্যের থেকে চলে আসা যুবকরা দিব্যি ঘুরে বেড়িয়েছেন শহরের আনাচে কানাচে।
যে সময় অন্য রাজ্য থেকে আসার পর তাদেরকে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইন এ থাকার কথা বলা হয়েছে, সে সময়টা শুধুমাত্র মুখে মাক্স পড়েই ওরা ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকায়। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের গোটা শহর যখন ঘরবন্দি তখন সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেল দিল্লি ও কর্নাটকসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা একাধিক মানুষকে।
আরও পড়ুনঃ বাড়ি ফেরার পথেও, আগাম সতর্কতা যাত্রীদের
এদিন সকালে অনেককেই যেমন শহরের যত্রতত্র গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে যেতে দেখা গেছে। তেমনি টার্মিনালের মতো একটি জমজমাট এলাকা যখন কার্ফুর জেরে এদিন জনমানবহীন, তখন একটি জায়গাতে দেখা গিয়েছে একাধিক ভিন রাজ্যের যুবকদের।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনের জেরে বন্ধ রেল ও ফেরি পরিষেবা, গৃহবন্দি সাধারন মানুষ
জানা গেছে, স্থানীয় মাটিকুণ্ডা এলাকায় তাদের বাড়ি। স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে চলে এসেছে শহর ইসলামপুরে। আবার কেউ হাসপাতালে ঘুরে এসেছে। কিন্তু এমনটা তো হবার কথা নয়। তারা কি নিয়ম কানুনের কিছুই জানেন না? তারা কি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন নন? কিছুই জানেন না সরকারের নির্দেশ সম্পর্কে?এই দৃশ্য দেখার পর এখন প্রশ্ন জেগেছে ইসলামপুরের কৌতুহলী মানুষদের মধ্যে।
ঘরবন্দী থেকে শহরবাসী যখন সচেতন, তখন উল্টোচিত্র শহরের মধ্যেই। এর জেরে শহরের মানুষদের মধ্যে উদ্বেগের পারদ কিছুটা হলেও চড়িয়ে দিল ওই ভিন রাজ্যের যুবকরা।
এ বিষয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনকে আরও শক্ত হওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। এদিন সকালে গাড়ি থেকে নেমেছেন একাধিক মানুষ। যারা অধিকাংশই ভিন রাজ্যের। তাদের কথা কি প্রশাসন জানে? তাদের কি আদৌ স্ক্রিনিং টেস্ট হয়েছে? এসব প্রশ্ন উঠে এসেছে এলাকার বাসিন্দাদের তরফেই।
ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার শচীন মাক্কার জানান,” ভিন রাজ্য থেকে এসে এলাকায় প্রবেশ করছে যারা, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে”।পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্য সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের বাড়িতে খবর পাঠানো হচ্ছে। তারা যেন হোম আইসোলেশন থাকেন এবং এদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
যেহেতু আইসোলেশন বিভাগে পর্যাপ্ত বেড নেই, তাই সেরকম প্রয়োজন না হলে বাড়িতেই নিজস্ব তদারকিতে রাখার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ভিনরাজ্যে কর্মরত ২৮ জন শ্রমিককে উদ্ধার করার পর কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠালো উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার একটি বিশেষ বাসে কলকাতা থেকে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে রায়গঞ্জে আনা হয়৷ মহকুমা শাসক, স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ কর্মীদের তত্ত্বাবধানে এদিন বিন্দোল কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য ওই শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন ব্লকে বাসিন্দা ওই ২৮ শ্রমিক কর্ণাটকে কর্মরত ছিলেন। এদিকে কর্ণজোড়ার বোগ্রামে ১০ শয্যা বিশিষ্টি কোয়ারান্টাইন সেন্টার চালু করা হল এদিন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584