শ্যামল রায়,বর্ধমানঃ
শরীর দুর্বল তবুও পেটের খাবার জোগাড় করতে পথে পথে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে বেঁচে রয়েছে কালনার বেগ পুরের বাসিন্দা হাজু বিবি।
বয়স ৭০ বছর পেরিয়ে গেছে। তবুও কোনরকম হাঁটাচলা করে ভিক্ষে করে যাচ্ছেন তিনি।
রবিবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পারসা পুর গ্রামে ভাগ্নে হাসিবুল শেখের বাড়িতে যান।
ওখানেও হাত পেতে ভিক্ষা করেছেন হাজু বিবি।
ভাগ্নিবাড়ি উপস্থিত থেকে সাজু বিবি চোখের জল ফেলে আঁচল দিয়ে মুছে জানালো একমাত্র ছেলে ইকরামুল মন্ডল। কলকাতায় পুলিশের চাকরি করেন। বিয়ে করার পর থেকে আমাকে দেখেন না।
বহুবার ছেলের কাছে আবেদন নিবেদন করেছিলাম বেঁচে থাকার জন্য কিছু টাকা পয়সা দেওয়ার কথা। আজও ছেলে টাকাপয়সা দূরে থাক খোঁজ খবরও নেয় না। তাই বেঁচে থাকার জন্য পথে পথে ভিক্ষা করেই জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তিনি আরো আক্ষেপ করে বলেন যে তার স্বামীর বাড়ির জমি সহ তিনবিঘা জমি রয়েছে সেটাও ছেলে আমাকে ভুল বুঝিয়ে লিখে নিয়েছে। তাই আমি এখন নিঃস্ব কোথায় যাবো কি করবো কি করে বেঁচে থাকবো বুঝে উঠতে পারছিনা। এইভাবে আর কতদিন মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষে করে বেঁচে থাকা যায়। তাই আমার মৃত্যু ছাড়া আর কোন পথ নেই।
ভাগ্নে হাসিবুল শেখ বলেন যে আমার লজ্জা বোধ হচ্ছে যে একমাত্র ছেলে ইকরামুল মন্ডল পুলিশে চাকরি করেও মাকে খোঁজখবর রাখে না মায়ের জন্য একটি টাকাও দেন না বলতে ঘৃণা বোধ হচ্ছে। তাই দিদি হাজু বিবি কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার যতটুক জমি আছে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু করার করবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর দ্বারস্থ হবেন দু-একদিনের মধ্যে। এছাড়াও মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের দ্বারস্থ হবেন ছেলের অমানবিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে।
এই বয়সে আর কতদিন ভিক্ষা করে জীবন যাপন করা যায়? তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে নিজস্ব জমিটুকু বিক্রি করে যাতে বেঁচে থাকতে পারেন তার ব্যবস্থা নিতেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন দিদি জানিয়েছেন ভাগ্নে হাসিবুল শেখ। ছেলের অমানবিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাই এই বৃদ্ধা যাতে বেঁচে থাকতে পারেন তার সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন স্থানীয় বাসিন্দারা একথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584