মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বক্সিরহাট এলাকা। শনিবার সকালে অসম-বাংলা সীমান্তের বক্সিরহাট এলাকায় তুফানগঞ্জ ২ নং সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের করনে বারোকোদালি-২ ও মহিষকুচি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করা হয়। ওই বিডিও অফিসের সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। ছোঁড়া হয় তীরও। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র্যাফ। সূত্রের খবর, এদিনের সংঘর্ষে আহত হয়েছে ২ পক্ষের বেশ কয়েকজন।
জানা গেছে, লোকসভা নির্বাচনের পর কোচবিহারের মহিষকুচি ১ ও বারোকোদালি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল। এরপর পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল পঞ্চায়েত প্রধানকে। কিছুদিন পর ফের তৃণমূলে ফেরে দলত্যাগীরা। এরপর শনিবার বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের বক্সিরহাট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। তাদের লক্ষ্য করেও পাথর ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে লাঠি চালায় পুলিশ। সংঘর্ষে বিজেপি-তৃণমূল দু’দলেরই বেশ কিছু সমর্থক আহত হয়েছে বলে খবর। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও উত্তপ্ত রয়েছে এলাকা। টহল দিচ্ছে পুলিশ।
তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের বিডিও ভগিরথ হালদার জানিয়েছেন, আজ ওই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। ১৩ আসন বিশিষ্ট বারকোদালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন চলাকালীন ১০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সুমন বর্মন প্রধান মনোনীত হয়েছেন। সন্তোষ পাল উপপ্রধান হয়েছেন। ১০ আসন বিশিষ্ট মহিষকুচি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের সময় ৯ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রধান ও উপপ্রধান রয়েছেন যথাক্রমে মীনাক্ষী সরকার বর্মন ও সঞ্জীব অধিকারী।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের পালা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা সুরেশচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে বোর্ড প্রক্রিয়া চলাকালীন বিজেপি কর্মীরা গোলমাল বাধাতে তীর ধনুক, কাটা পাথর নিয়ে আক্রমণ করে। এমনকি আমাদের নির্বাচিত তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
যদিও বিজেপির তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র সংযোজক উৎপল দাসের অভিযোগ, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করতে তৃণমূল আগ্নেয়াস্ত্র সমেত বহিরাগতদের জমায়েত করেছিল বিডিও অফিস চত্বরে। তারাই গোলমাল করেছে। নিরীহ বিজেপি কর্মীদের ওপর আক্রমন করছে।’ পুলিশের আশ্রয় নিয়ে তারা অবৈধভাবে এসব করেছে বলে উৎপলবাবুর অভিযোগ। ওই ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584