সিমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ
বিজেপি করার অপরাধে রায়ত জায়গা বলপূর্বক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। চাষের জমি হারিয়ে হতবাক সত্তর বছরের বৃদ্ধা শতদল পয়রা।
প্রশাসনের কাছে দ্বারস্থ হয়েও মিলছে না কোনও সুরাহা। জমি ফেরত চাইতে গেলে বৃদ্ধার কপালে জুটেছে মারধর থেকে হুমকি। স্বামীহারা শতদলের তাই একমাত্র ভরসা ভগবানই।
আরও পড়ুনঃ বর্ধমানে সিএএ-র সমর্থনে বিজেপির পদযাত্রায় আলুওয়ালিয়া
ঘটনাটি সাগর ব্লকের রামকচ্চর গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিণবাড়ি গ্রামের ঘটনা। এই গ্রামে ৭৮ নম্বর বুথে বাস ৭০ বছরের শতদল পয়রার। দশ বছর আগে মৃত্যু হয়েছে স্বামী গোবর্ধন পয়রার।
পাঁচ ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে কোনওক্রমে সংসার চলছিল বৃদ্ধার। নিজের বুদ্ধিমত্তায় বড় করেছেন তাদের। কিন্তু আজ তারা আলাদা থাকে। ফলে বৃদ্ধাকে জীবনে একাই চলতে হয়।
আরও পড়ুনঃ দলীয় রশিদে তোলা বাজি, গ্রেফতার দুই বিজেপি কর্মী
এই হরিণবাড়ি গ্রামে মাটির দেওয়ালের এক চিলতে ঘরে বাস বৃদ্ধার। প্রেম করে বিয়ে করায় বাপের বাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারেনি। পরবর্তীকালে অভাব-অনটনে ১৬ শতক জায়গা লিখে দেয় গোবর্ধনের নামে। সেই জায়গাতেই চাষ করে খাচ্ছিলেন পয়রা পরিবার।
কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর সমস্ত জায়গা চলে আসে শতদলের উপরে। কিন্তু বেশ কয়েকদিন হল সেই জায়গার উপরে পোঁতা হয়েছে তৃণমূলের দলীয় পতাকা। ফলে চলতি বছরের চাষও হারাতে বসেছে ওই বৃদ্ধা।
বারবার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সদস্য, স্থানীয় নেতৃত্ব কারও কাছে গিয়েই মিলছে না কোনও সমাধান। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ৭০ বছরের শতদল। পরিবারের দাবি, বসতবাড়ির পাশে রয়েছে ভেসটেড জায়গা, যার পরিমাণ ১৬ শতক। সেই জায়গা গোবর্ধনের দখলে।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়িতে ডিওয়াইএফআই-র উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র
সিপিএম ক্ষমতায় থাকাকালীন সেই জায়গা সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। গোর্বধন পরে সেই জায়গার আধিপত্য লাভ করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরবর্তীকালে গোবর্ধনের ছেলেরা জায়গা নিতে গেলে হামলা চলে তৃণমূলের তরফে। টিনের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। করা হয় মারধর। এমনকী বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয় বলে দাবি।
এরপরে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিমল জানার নেতৃত্বে তৃণমূল সমর্থক চিত্তরঞ্জন পাল, স্বপন গিরি ,স্বদেশ মন্ডল ও অঞ্চল সভাপতি এই জায়গার দখল করতে আসে। কিন্তু দখল করতে গেলে বাধা দিতে যায় শতদল পয়রা। আর সেই সময় মারধর করা হয় বৃদ্ধাকে। ভেসটেড ল্যান্ড না পেয়ে রায়ত জায়গা হাত বাড়ায় বলে দাবি অভিযুক্তের ছেলের।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন সাগর মন্ডল। পাল্টা অভিযোগ কাটিয়ে সমাধানের আশ্বস্ত করেছেন সাগর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি স্বপন প্রধান। শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ৭০ বছরের বৃদ্ধা শতদল পয়রা। মৃত স্বামীর ছবি ধরে কাঁদা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তাঁর।
প্রশাসনের কাছে গিয়ে আজও মিলছে না সমাধান। একের পর এক জুলুমবাজি বেড়ে চলেছে গোটা এলাকায়—দাবি বৃদ্ধার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584