নিজস্বপ্রতিবেদক,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন বড় বড় হাটগুলিকে ঘাঁটি করেই বাড়ছে কচ্ছপ পাচারের রমরমা। বিহার থেকে কচ্ছপ নিয়ে এসে চোরাকারবারীরা তা পাচার করছে বাংলাদেশে। মাঝপথে জেলার বালুরঘাট, কামারপাড়া, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাট ও বুনিয়াদপুরের সরাইহাটে রমরমিয়ে কার্যত প্রশাসনের নাকের ডগায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মোটা টাকা উপার্জনের জন্য এই বিলুপ্ত প্রায় প্রানীটিকে হত্যা করে চলেছে, অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা পালনের বিরুদ্ধে।
ফলে জেলার গ্রামীণ এলাকার হাটগুলিতে গোপনে কচ্ছপ কেটে বিক্রি চলছে বলে অভিযোগ। বন দফতর কিছু জায়গায় হানা দিলেও মূল কারবারীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। বন দফতরের এক কর্মী জানান, প্রায়ই বিভিন্ন হাটে হানা দিয়ে অবৈধ কচ্ছপ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালাই কিন্তু তা যে যথেষ্ট নয়, তা কচ্ছপের মাংস বিক্রির রমরমা কারবার থেকে তারা সেটা বুঝতে পেরেছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হাটগুলিতে কচ্ছপের মাংসের চাহিদা বেড়ে গেছে। এক কেজি কচ্ছপের মাংস হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ফলে বিলুপ্ত প্রজাতির এই প্রাণীকে নিয়ে জেলায় বড় কারবার গড়ে উঠেছে। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গারামপুরের একটি এলাকা থেকে কচ্ছপ গোটা জেলার হাটগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। বস্তাবন্দি ছোট কচ্ছপ থেকে বড় আকারের বিরল কচ্ছপও ওই অবৈধ কারবারীদের হাতে পড়ে ক্রমাগত মারা পড়ছে।
জেলার বিভিন্ন বড় হাটগুলিতে কিভাবে আসে কচ্ছপগুলি?
সুত্রের খবর, বিহারের পূর্ণিয়া হয়ে ডালখোলা দিয়ে রায়গঞ্জ হয়ে প্রতি সপ্তাহে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের সরাইহাটে এবং গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাটে বস্তায় করে কচ্ছপ নিয়ে আসা হয়।
জেলা জুড়ে হাটগুলিতে গোপনে কচ্ছপের মাংস বিক্রির পাশাপাশি কচ্ছপের চর্বিও বাংলাদেশে পাচার হয়। ওষুধ তৈরির জন্য বাংলাদেশ হয়ে ওই চর্বি আবার বিদেশে যায় বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে। গত বছর হিলি এলাকা থেকে বিএসএফ কয়েক বস্তা ভর্তি কচ্ছপের চর্বি উদ্ধার করেছিল। যার প্রতি কেজির দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। এ জেলার গঙ্গারামপুর লাগোয়া কুমারগঞ্জ এবং বুনিয়াদপুরের সরাইহাট এলাকায় গোপন ডেরায় চৌবাচ্চা তৈরি করে কচ্ছপগুলিকে রাখা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন বাস পাল্টে বস্তাবন্দি করে কচ্ছপ বিভিন্ন প্রান্তে কারবারিদের হাতে পৌঁছে যায় বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানা গেছে, যা তথ্য আমরা পেয়েছি, তাতে করে এই অসাধু কচ্ছপ ব্যবসায়ীদের কচ্ছপ কারবারিদের হাতেনাতে ধরা সম্ভব হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584