“ঐতিহ্য বনাম আধুনিকতা-বহরমপুর” -অর্ক দত্ত।
পুরনো জমিদার বাড়ি… প্রোমোটারের আনাগোনা …টাকার খেলা… প্রথম শুনলেই মনে হবে আরে এতো ভূতের ভবিষ্যত এর চিত্রনাট্য।সবই ঠিক ছিল কিন্তু সিনেমার মতো বাস্তবে ভুতেদের কোন ভবিষ্যত থাকেনা। তাই বহরমপুর শহরের ব্যস্ততম নূতনবাজার এলাকায় দিনের আলোয় ভাঙা পড়ে শহরের অন্যতম প্রাচীন বাড়ি। সাধারণের কাছে বাড়িটি হরিবাবুর বালাখানা নামেই পরিচিত।
পুরনো লাল রঙের গথিক স্থাপত্য রীতির যে বাড়িটির পরতে পরতে ছিল ইতিহাসের ছোঁয়া, সে বাড়ি আজ কালের নিয়মে নিজেই ইতিহাসের পাতায়। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় যে বিখ্যাত জমিদার বনবিহারী সেন সহ এই পরিবারের সদস্যদের বিনোদন ও বৈঠকী আড্ডাখানা হিসেবে ভবনটি একসময়ে ব্যবহৃত হতো । 1906 সালে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধায় বহরমপুরে এলে ছাত্ররা তাকে এই ভবনের বৈঠকখানায় স্বাগত জানায়। এরকম বহু উল্লেখযোগ্য ঘটনার সাক্ষী স্রেফ মিশে যায় ধুলোয়।
বাঙালী এক আত্মবিস্মৃত জাতি একথা আজ প্রায় সর্বজনবিদিত। যুগের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা যত হয়ে উঠছি আধুনিক, তত জীবন থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, জীবনধারণের আঙ্গিক। হয়তো এটাই যুগধর্ম । বাস্তবের ভূত অর্থাৎ অতীত তাই ভবিষ্যতের পাতায় আর ঠাই পায় না। সমাজ, রাজনীতি্, অর্থনীতি ও উন্নয়নের গোলকধাঁধায় তাই চাপা পড়ে যায় কিছু জরুরী প্রশ্ন … ভেসে থাকে শুধু বহু প্রাচীন সূর্যাস্তের আলোয় ধুয়ে যাওয়া বারান্দা … অজস্র পায়রার আনাগোনা …আলোছায়ার খেলা… আর সময়ের জলছাপ হারিয়ে যায় অবহেলায়, ভাগীরথীর বিপুল পলিগর্ভে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ মুর্শিদাবাদ জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584