উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
রাজ্যের প্রাণীসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রশিক্ষণ ও ডিপ্লোমা প্রাপ্ত ভেটেনারি ফার্মাসিস্টদের কথা দিয়েছিলেন সরকার তাদের চাকরি দেবে শীঘ্রই। কিন্তু আট বছর কেটে গেলেও চাকরি পায়নি তারা। তাই এবার মন্ত্রীর ঘরের সামনে অনশনে বসতে চলেছে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ভেটেনারি ফার্মাসিস্টরা।
রাজ্যে এখন মোট ভেটেনারি ফার্মাসিস্ট পদের সংখ্যা চারশো তিরানব্বই। খালি পদ আজ পর্যন্ত পড়ে আছে একশো ঊনসত্তর টি। কিন্তু এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বসে আছে একশো জনের মত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বেকার। দুহাজার বারো সাল থেকে এই পদে নিয়োগ বন্ধ । এবিষয়ে কোনো হেলদোল নেই সরকারের। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন ভেটেনারি ফার্মাসিস্ট হিসেবে ডিপ্লোমা ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কোচবিহারের পল্লব পাল, হুগলির পল্লব পরমানিক, পূর্ব বর্ধমানের আনারুল ইসলাম।
তাঁদের প্রধান অভিযোগ, “আমরা পাস করে বসে আছি। খালি পদ পড়ে আছে। তবু আমাদের চাকরি দিচ্ছে না সরকার। প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে আমাদের কাজ করানো হচ্ছে প্রাণীবন্ধু ও প্রাণীমিত্রদের দিয়ে। ওদের তিন মাসের একটা প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন কী ফার্মাসিস্ট হিসেবে আমাদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও দেওয়া হচ্ছে না। আমরা বার বার মন্ত্রীর কাছে দাবি জানালেও তিনি অগ্রাহ্য করছেন। এর বিরুদ্ধে আমরা এগারোই নভেম্বর সল্টলেক সেক্টর তিন, প্রাণীসম্পদ ভবনে মাননীয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের ঘরের সামনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশনে বসছি। চাকরি ও রেজিস্ট্রেশন না দিলে আমরা প্রাণত্যাগ করতে রাজী আছি।”
আরও পড়ুনঃ পাহাড় রাজনীতিতে ফেরার আসামী বিমল গুরুংকে পাত্তা দিতে নারাজ বিনয় তামাং
এবিষয়ে রাজ্যের প্রাণীসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,”এদের নিয়ে ভাবছি। এদের খালি পদ পড়ে আছে। করোনার জন্য নিতে পারছি না এদের। ওরা আমার কাছে এসেছিল। ওদের যা বলার বলেছি। অর্থ দফতর সবুজ সংকেত দিলেই ওদের বহাল করব। এর মধ্যে যদি ওরা অনশন করে কী আর করা যাবে!”
আরও পড়ুনঃ খড়্গপুর- টাটানগর শাখায় ট্রেনের গতি বাড়াতে জোর কদমে শুরু হয়েছে তৃতীয় লাইনের কাজ
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীপালন ও পশু চিকিৎসায় দু বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পড়ানো হয়।বেশ কিছু পড়ুয়া পাশ করলেও দুহাজার বারো সালের পর থেকে ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভেটেনারি ফার্মাসিস্ট পদে নিয়োগ হয়নি। এর ফলে অনেক পড়ুয়া এবিষয়ে সাফল্যের সঙ্গে কোর্স শেষ করলেও তারা বর্তমানে চাকরিহীন বেকার। এছাড়া বিভিন্ন ব্লকে ভেটেনারি ফার্মাসিস্ট না থাকার জন্য অর্ধ শিক্ষিত প্রাণীবন্ধু বা প্রাণীমিত্রদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রতি বছর ত্রিশ জন করে পড়ুয়া এই কোর্সে ভর্তি হন। মাঝে দুহাজার তের-চোদ্দ-পনের (তিন বছর) এই কোর্সে ভর্তি নেওয়া সরকার বন্ধ করে রেখেছিল। দুহাজার ষোল সাল থেকে ফের এই কোর্সে ভর্তি নেওয়া শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানালেও কোন ফল হয়নি বলে অভিযোগ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584