পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের সাথে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বৈঠকের পরে এক নজিরবিহীন প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর প্রার্থীদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দীক্ষিত সিংহ ,শান্তভানু সেন, প্রিয় রঞ্জন ঘোষ, সুদৃপ্ত ঠাকুর, কুন্তল রুদ্র। সুষ্ঠভাবে বিশ্বভারতী পরিচালনা করার জন্য ১৫ টি দাবি নিয়ে প্রাক্তনীরা বৈঠকে প্রস্তাব দেন উপাচার্যকে।
বৈঠকে উপাচার্য সামান্য সময় ব্যয় করেছেন প্রাক্তনীদের প্রস্তাব শোনার জন্য। কিন্তু বেশিরভাগ সময় তিনি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর নিয়ম-নীতি বোঝানোর জন্য। এককথায় বলা যায় প্রাক্তনীদের সাথে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বৈঠক কার্যত নিষ্ফলায় পরিণত হয়েছে। বৈঠকে যোগ দেওয়া প্রাক্তনীদের দাবি, উপাচার্য তার নিজস্ব হিটলারি ভঙ্গিমাতেই আছেন। এত মানুষের বিক্ষোভের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি তার মনোমতো ভাবেই বিশ্বভারতী পরিচালনা করতে চাইছেন৷
আরও পড়ুনঃ প্রথা মেনেই হবে আশকোলা গ্রামের শতাব্দী প্রাচীন মনসা পুজো
বৈঠক শেষ করে প্রাক্তনীরা চলে যাবার পর বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে ১৪ টি নির্দেশিকা দেওয়া হয় প্রাক্তনীদের জন্য। বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার ভাবে বিশ্বভারতী নির্দেশিকা দিয়েছে, বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রাক্তনীদের পাঁচ লক্ষ টাকা করে বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দিতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে এগারো নং পয়েন্টে লেখা হয়েছে শিল্পী শান্তিদেব ঘোষের বাড়ি এবং তার জায়গা বিশ্বভারতীকে দান করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে প্রাক্তনীদের। বিশ্বভারতীর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ক্ষোভে ফুঁসছে বিশ্বভারতীর সমস্ত প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমীকরা। সুপ্রিয় ঠাকুর জানিয়েছেন, উপাচার্য এই ধরণের নির্দেশিকা কখনোই জারি করতে পারেননা। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ডক্টর প্রলয় নায়েক বলেছেন, “গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলে বীরভূমের নাম বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুনঃ এপিজে আব্দুল কালামের জন্ম বার্ষিকী উদযাপন ডোমকল এসডিপিও অফিসে
তাই বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী হিসেবে অত্যন্ত গর্ববোধ করি। গুরুদেবের ঐতিহ্য এবং আদর্শ রক্ষা করতে সমস্ত রকমের সহযোগিতা করতে আমরা প্রাক্তনীরা রাজি। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একনায়কতন্ত্র রাজ কায়েম করে যে শাসনব্যবস্থা প্রাক্তনীদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।” প্রবীণ বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী কুন্তল রুদ্র জানিয়েছেন, “উপাচার্যের এই সিদ্ধান্ত প্রতিশোধমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।” ইতিমধ্যে তিনি সমস্ত প্রাক্তনীদের আহ্বান জানিয়েছেন মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সকল প্রাক্তনীদের বড় লড়াইয়ের সম্মুখীন হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584