পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
মাত্র কয়েকদিন আগে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বহিরাগতদের আক্রমণ করতে বলেছিলেন বীরভূম জেলা বিজেপির সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে।স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছিলেন, মানুষের নিজস্ব অধিকার আছে আত্মরক্ষার,তাই বলেছি বাইরে থেকে চোর বা ডাকাত এলে বটি নিয়ে যেন প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
সোমবার বোলপুর থানার বড়ডিহা গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে সেই দিলীপ ঘোষ আবারো সদর্পে ক্যামেরার সামনে বলতে থাকেন, বাড়িতে টাঙ্গি, বল্লম, চাকু, বটি, শান নিয়ে রাখবেন, রাত্রিবেলায় অনেক সময়েই চোর ডাকাত বাড়িতে আসছে, বুঝতে পারলেই কাঁসড়, ঘন্টা, মোবাইল ফোন নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশী সহ গ্রামবাসীকে জড়ো করবেন, তারপর ঘিরে ধরে সেই শান দেওয়া অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে মারুন।কিচ্ছু হবে না আপনাদের একদম ভয় পাবেন না।
নির্বাচন ঘোষণার পর নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন তৃণমূল কর্মীদের ডেথ সার্টিফিকেট লেখা হয়ে গেছে শুধু বিলি করার অপেক্ষা। রাজ্য বিজেপি সভাপতির কুকথার সেই ধারাকে অব্যাহত রেখে কখনও ভারতী ঘোষ,সায়ন্তন বসু,আবার জেলাস্তরে নেতারাও সামিল হয়েছে মারকাটারি শব্দের বান ছোটাতে।
বীরভূম জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন,দিলীপ ঘোষ পাগল হয়ে গেছে, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে বিজেপি পরাজিত হবে সেটা বুঝেই ভুল বকতে শুরু করেছে। ২৩ তারিখ ফল ঘোষণার পর দিলীপ ঘোষের বাঁদর নাচন নাচানো হবে।বুঝতে পারবে একবার এদিকে একবার ওদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা দেখাতে কেমন মজা লাগে।সস্তার প্রচার পেতে এই ধরনের বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে সামনে রাখছেন তবে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান বিষয়টি নিয়ে যদি কেউ থানায় অভিযোগ করে পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের বামপ্রার্থী রামচন্দ্র ডোম অবশ্য বলেন, এই ধরনে বক্তব্যে এখন আর মোটেও অবাক হইনা। বিগত ৭ বছর ধরে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে যে ধরনের হিংসাত্মক শব্দ শুনে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি তাতে দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য আমাদের নতুন করে আর ভাবায় না। কারণ সন্ত্রাসের ভাষার যে লড়াই সেটা এখন বিজেপি বনাম তৃণমূলের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। মারকাটারি রক্তাক্ত রাজনৈতিক পরিবেশের যে আবহাওয়ায় আমরা এখন বেঁচে আছি সেটা আমাদের দুর্ভাগ্য। হিংসা, হানাহানি,বোম,বন্দুক, গুলি, ছাড়া বিজেপি তৃণমূল নেতাদের মুখে কোন ভালো শব্দ আশা করাই বৃথা।আর এখান থেকেই আমাদের বামপন্থীদের লড়াই শুরু।
আরও পড়ুনঃ বাড়ুইপুরে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষ
মানুষের কাছে এগিয়ে গিয়ে আমরা বলতে চাই বদলা নয় বদল স্লোগান নিয়ে যে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবাংলায় ক্ষমতায় এসেছিলেন তা আজ বদলা রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। মানুষকে সজাগ করে সঠিক পথের দিশা দেখাতেই বামপন্থীরা লড়াই চালিয়ে এসেছে এতদিন ভবিষ্যতেও লড়াই চালিয়ে যাবে এই ধরনের হিংসাত্মক মুলক রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং দলের বিরুদ্ধে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584