রবিবারের গল্পঃ রাসমেলা

0
115

প্রিয়রঞ্জন কাঁড়ার

ক্লাসের অ্যানুয়াল পরীক্ষার শেষ দিন ইতিহাস। সেদিন সন্ধেবেলা বাবলুকে নিয়ে মা-বাবার উলুবেড়িয়ার রাসমেলায় যাওয়ার কথা ছিল।

Rashmela | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

কিন্তু জরাথুস্ট্র সহ দুটো বড় প্রশ্ন ছেড়ে আসায় বাবলু শাস্তি পেয়ে বাড়িতে বসে। রাতে স্বপ্নে জরাথুস্ট্র স্বয়ং দেখা দিলেন বাবলুকে।
— “কী রে, মন খারাপ?”
— “হুম। আমি তোমার সব কথাই জানি। কিন্তু তোমার ভগবান আহুরা মাজদা’র দেখা কীভাবে পাওয়া যায়, সেকথা ভাবতে ভাবতে আর উত্তর লেখার সময় পাইনি।”
–“আহুরা মাজদা’র দেখা পেতে গেলে আগুনের মতো পবিত্র হতে হবে।”

Priyaranjan Karar | newsfront.co
প্রিয়রঞ্জন কাঁড়ার

পরদিন বাবা-মাকে কিছু না জানিয়ে জমানো পয়সা পকেটে উলুবেড়িয়ার বাসে চেপে বসলো বাবলু। রাসমেলায় প্রচন্ড ভিড়ে কান্না পেয়ে গেল তার। হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে শোরগোল উঠলো, জনতার পদপিষ্ট হয়ে একটি বাচ্চা মারা গেছে এবং পুলিশ জনতাকে লাঠিচার্জ করছে।

গুজবে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়লো। কালীমন্দির থেকে বেরিয়ে বাসস্ট্যান্ডের বিপরীত দিশায় অন্ধের মতো ছুটতে লাগলো বাবলু। রাস্তার দু’পাশে কিছু মেয়ে অদ্ভুত ভাবে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে আছে। একজন ফোড়ন কাটলো, “কী রে, দুধের দাঁত ভাঙেনি, এখনই এ’পাড়ায়!”

আরও পড়ুনঃ বিস্মৃত বাঙালি রেজিমেন্টের ইতিহাস

বাবলু কিচ্ছু বুঝতে না পেরে শাল মুড়ি দেওয়া একজনকে পিছন থেকে ডাকলো, “কাকু, আমি বাসস্ট্যান্ড যাবো, রাস্তা গুলিয়ে ফেলেছি।” তিনি পিছন ফিরলেন। পুরুষ নন, মহিলা। তাঁরও সাজ বাকিদের মতোই। ভিড়ে ও ধাক্কাধাক্কিতে বাবলুর মুখে রক্তের দাগ, জামা ছিঁড়ে গেছে। মহিলা বাবলুকে নিজের একটা ছোট্ট ঘুপচি ঘরে নিয়ে গিয়ে মুখ ধুইয়ে ওষুধ লাগিয়ে দিলেন। বাতাসা-মুড়ি খাওয়ালেন।

একটা হ্যারিকেন হাতে বাবলুকে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দিলেন। সেই রাতে বাবলু স্বপ্নে দেখলো, সন্ধেবেলার সেই মহিলা একটা অগ্নি বলয়ের মধ্যে দিয়ে হাঁটছেন। তাঁর অঙ্গ পুড়ছে না। অগ্নি বলয়ের শেষে মহিলার দিকে দু’হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং আহুরা মাজদা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here