পঞ্চায়েতে বিজেপি-কংগ্রেস জুটির ভাগাভাগিতে কাজ পাচ্ছে না গ্রামবাসী

0
41

পিয়া গুপ্তা,উত্তর দিনাজপুরঃ

the villages hasn't get work for divided
নিজস্ব চিত্র

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় যখন বিজেপির নেতা কর্মীরা গ্রামে আসেন ভোট চাইতে তখন তারা কথা দিয়েছিলেন যে তারা যদি পঞ্চায়েত দখল করতে পারে তাহলে তাদের গ্রামেই বেশি বেশি করে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হবে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে।

তাদের আর কাজের জন্য ভিন রাজ্যে যেতে হবে না।সেই আশা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার পর গ্রাম পঞ্চায়েত সত্যি সত্যি দখল করে বিজেপি।প্রধান হন বিজেপির রুনা বালা দেব শর্মা আর উপপ্রধান হন কংগ্রেসের সৌম হাসদা।কিন্তু নির্বাচনের পর আর ‘তোমার দেখা নাইরে তোমার দেখা নেই’। গ্রামের মানুষদের আমরা আর চিনি না।ওরা চুলায় যাক।

the villages hasn't get work for divided
জবকার্ডধারী গ্রামবাসী।নিজস্ব চিত্র

এমন ভাব গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উপপ্রধান এর।হ্যাঁ এমন এক ভূ ভারতে গ্রাম পঞ্চায়েতের সন্ধান পাওয়া গেল যেটি উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েত।যে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান বিজেপি আর উপপ্রধান কংগ্রেসের।

সারা ভারতে যখন বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলা ঠিক সেই সময় কালিয়াগঞ্জ এর এই গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস ও বিজেপির প্রেম এতোটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এখন যে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে যেকোনো কাজের বেশিরভাগটাই বিজেপির প্রধান কংগ্রেসের জয়ী সদস্যদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দিচ্ছেন এমনটাই অভিযোগ। ফলে বিজেপির বিভিন্ন গ্রামের সর্মথকরা এখন ভীষণ ক্ষুব্ধ মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান রুনা বালা দেবশর্মার উপর।

আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগে জাতীয় সড়ক অবরোধ গ্রামবাসীদের

মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাই পাড়া,রায়পুর এর প্রায় তিনশো মতো এমন মানুষ রয়েছেন যাদের ১০০ দিনের জব কার্ড থাকলেও একদিনো তারা কাজ করতে পারেননি।এরা মূলত বেশিভাগ কৃষিজীবী ও দিনমজুর।এই গ্রামে গিয়ে বিষয়টা সরেজমিনে দেখতে গেলে গ্রামের ক্ষীরোদ রাজবংশী, চিত্ত রঞ্জন রায়, সুরেন্দ্র নাথ রায়, চুনু হাঁসদা, সুরোজ মুনি মুর্মু, রহর মার্ডি, দুর্গা মার্ডি রা জানালেন তাদের ক্ষোভের কথা।তারা বলেন তারা গ্রামের অত্যন্ত গরীব মানুষ।

নির্বাচনের সময় বিজেপির নেতা কর্মীরা তাদের আশ্বাস দিয়েছিল যে তারা ক্ষমতায় আসলে তাদের গ্রামে ১০০ দিনের বেশি বেশি করে কাজ দেওয়া হবে। আর তাদের কাজের অসুবিধা হবে না।তাই তাদের কথা শুনে তারা বিজেপিতে নাম লিখিয়ে ছিলেন।

নির্বাচনের সময় বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিলেন একটাই আশা নিয়ে তাদের হয়তো এবার দুঃখ ঘুচবে, গ্রামেই তারা কাজ পাবে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বেশি বেশি করে।কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আজ অব্দি তারা কোন ১০০ দিনের কাজ করতে পারেননি অথচ তাদের রয়েছে জব কার্ড।গ্রাম পঞ্চায়েতে তারা কাজের জন্য গেলেও সেখানেও তাদের পাত্তা দেওয়া হয় না।

তারা ক্ষোভের সাথে বলেন মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েত এখন বিজেপি ও কংগ্রেসের ভাগ বাটোয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতে পরিণত হয়ে গিয়েছে।এখানে গ্রামের সাধারন বিজেপি কর্মীদের দাম নেই। যদি দাম থাকত তাহলে চাইপাড়া ও রায়পুর এর মত গ্রামের প্রায় ৩০০ জনসাধারণ গরিব মানুষদের কাজের জন্য হন্য হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে যেতে হতো না।গ্রামে বসেই তারা কাজ পেতেন।

কিন্তু বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন।গ্রামের খেটে খাওয়া গরিব মানুষরা চুলায় যাক। গ্রামের ঐ সমস্ত মানুষরা জানান অবিলম্বে যদি তাদের কাজের ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে গ্রামের মানুষরা একত্রিত হয়ে মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েত ঘেরাও করবেন।সেক্ষেত্রে তারা দেখবেন না কারা ক্ষমতায় রয়েছেন কোন দল ক্ষমতায় রয়েছে।

তাদের শুধু চাই কাজ।তারা জানান সরকার থেকে গ্রামের মানুষদের বেশি বেশি করে কাজ দেওয়ার কথা বলা হলেও এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি কংগ্রেসের মধুচন্দ্রিমায় সেই কাজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের শত শত গরিব মানুষ।এদিকে এ ব্যাপারে মুস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুনা বালা দেব শর্মাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “গ্রামের মানুষদের অভিযোগ সবটাই মিথ্যা।

গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বহু মানুষকে কাজ দেওয়া হচ্ছে ১০০ দিনের। এক্ষেত্রে যারা আবেদন করেছে আগে তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আগে কাজ দেওয়া হচ্ছে যারা পড়ে আবেদন করেছে তারা পরে কাজ পাবে।এটাতে কোন রকম দূর্নীতি হয়নি বা রঙ দেখে দেখে কাজ দেওয়া হয়নি কোন মানুষকে।” তবে যাই হোক না কেন গ্রামের বহু মানুষরা যে এখনো কাজ পায়নি এটা সর্বৈব সত্যি।তাই তাদের কাজ চাই এটাই এখন একটাই প্রার্থনা সরকার বাবুদের কাছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here