উত্তর বঙ্গের তিন জেলা ভাসছে। বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ যতখানি না দায়ী তার চেয়ে অনেকগুন দায়ী মানুষ। ফলে সেইদিক থেকে বলা যায় যে এই বন্যা অনেকাংশেই মনুষ্যসৃষ্ট।কারণ যাই হোক মানুষ আজ অসহায়। আর সেই অসহায় মানুষগুলির পাশে দাঁড়ানো মানুষ হিসাবে প্রতিটি মানুষের দায়বদ্ধতা রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান সমগ্র রাজ্য থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও প্রয়োজনের তুলনায় তা বড়ই নগণ্য।
এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ সবচেয়ে বেশী দায়বদ্ধতা আশা করে সরকারী প্রশাসনের কাছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে প্রশাসন। অসহায় আর্ত মানুষ ত্রাণ লুঠ করতেও বাধ্য হয়েছে। প্রসাশনিক স্তর থেকে ঘোষনা হচ্ছে – ত্রাণ ত্রিপল শিশুখাদ্য রেডি কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্পীড বোর্ডের অভাবে তা বিপন্ন জায়গা গুলিতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক বুক জলে নিরন্ন বৃদ্ধা শিশুর কাছে এই আপ্ত বাক্যের মূল্য কি? এক মন্ত্রী মশায় বলেছেন ক্ষোভ খুব স্বাভাবিক। আহা রে(!) মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে এ খুব নিম্নরুচির সহানুভূতি প্রর্দশন নয় কি?
যে ধরনের ভয়াবহতা এ বছর উত্তরবঙ্গের তিন জেলাকে গ্রাস করেছে তা বর্ণনাতীত।মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন। সরকারী সাহায্যও অপ্রতুল। কিন্তু গণতন্ত্রের জাগ্রতঃ প্রহরী, ন্যায়ের কন্ঠ হিসাবে যে সংবাদ মাধ্যম, তারাও যেন ক্ষীনকণ্ঠী।বৈদুতিন বা মুদ্রিত সংবাদ মাধ্যমে যে ছবি উঠে আসছে তা হলো বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাওয়া নেতা মন্ত্রীদের ভেসে বেড়ানোর বা বন্যার জলে পা ডুবিয়ে যেন ফটোশুটের চিত্র।যে মিডিয়া অতিসক্রিয়তার দায়ে দোষী হয় সেই মিডিয়ার ভূমিকা কোথায় এই বিপন্ন মানুষদের বিপন্নতাকে প্রকাশ করতে?
এই বন্যা পরিস্থিতি শুধু আক্রান্ত মানুষদের ঘর ভাসালো না ভাসিয়ে দিল প্রশাসন ও সংবাদমাধ্যমের মিথ্যা ফানুসকে।দিনের শেষে অসহায় মানুষ অসহায়ই থাকে।ভাসমান মানুষগুলির এই উপলব্ধি কি সত্যিই মিথ্যা?
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584